টিকটক ভাইরাল করার ১৫টি গোপন টিপস

আপনি কি অনেক পরিশ্রম করার পরও টিকটকে কোনো মতেই ভাইরাল হতে পারছেন না? আপনার চেয়ে কম পরিশ্রম করেও কি অন্যরা টিকটকে ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আপনি পারছেন না?

তবে এখানে আপনার পরিশ্রমের অভাব না থাকলেও অনেক কিছুর ঘাটতি রয়েছে যা আপনাকে পূরণ করতে হবে। 

টিকটকে ভাইরাল হতে হলে আপনাকে পরিশ্রমের পাশাপাশি কিছু নিয়ম কানুন অনুসরণ করতে হবে তবেই আপনি ফেমাস হতে পারবেন।

সেলিব্রটিদের ভিডিও ছাড়ার সাথে সাথে ভাইরাল হয় কেন জানেন?

এখানে শুধুই ফলোয়ারের উপর ভিডিও ভাইরাল হবে কি হবে না সেটা নির্ভর করে না। এখানে কাজ করে অ্যালগরিদম যার ধারণা সব সেলিব্রেটিদেরই আছে কিন্তু তারা এটি কাউকে শেয়ার করে না।

আজকে আমি আপনাকে বলব কিভাবে আপনি খুব সহজে ভাইরাল/ফেমাস হতে পারবেন। এখানে আপনাকে টিকটকের অ্যালগরিদম সম্পর্কে ধারণা দিব এবং ভাইরাল হওয়ার কিছু নিয়ম কানুন শিখিয়ে দিব এবং সাথে কিছু টিপস ও ট্রিকস বলব যার মাধ্যমে আপনি অল্প পরিশ্রমেই টিকটকে ভাইরাল হয়ে যেতে পারবেন।

how to get viral on tiktok

TikTok কি?

TikTok মূলত একটি শর্ট ভিডিও শেয়ারিং এবং তৈরি করার প্লাটফর্ম।
TikTok আজকাল ভিডিও তৈরি এবং প্রকাশনার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে একটি।

এই TikTok অ্যাপটিতে 1B+ ডাউনলোডার রয়েছে এবং আজকাল প্রায় সবাই এখানে ভিডিও তৈরি করে।

এটি একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ইলন মাস্ক, জেফ বেজোসের চেয়েও TikTok-এর সেলিব্রিটিরা বেশি পরিচিত।

যেহেতু 1B+ ব্যবহারকারী আছে, তাই এখানে ভিডিওর পরিমাণ কম।
 ফেসবুকের মতো ভিডিওর চাহিদা না থাকায় এখানকার ভিডিওগুলোও খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।

তাই এখানে আপনি সহজেই ভাইরাল হতে পারেন এবং নিয়মিত কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করে একটি বিশাল সম্প্রদায় তৈরি করতে পারেন৷

এই বার মূল বিষয়টির দিকে যাওয়া যাক।

TikTok ভইরাল করার সেরা ১৫টি টিপস

টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায়গুলো নিচে দেওয়া হলো।

১. নির্দিষ্ট সময়ের ভিডিও আপলোড করুন

২. নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন

৩. ট্রেন্ডিং মিউজিক কিংবা গান ব্যবহার করুন

৪. ট্রেডিং বিষয়ের ভিডিও তৈরি করুন 

৫. সেলিব্রেটিদের সাথে কোলাবোরেশান করুন

৬. আলাদা ক্যাটাগরির ভিডিও আপলোড

৭. মূল্যবান ও অর্থ বহ  ভিডিও তৈরি করুন

৮. টাইটেল ও হ্যাসট্যাগ ব্যবহার করুন

৯. নতুন আসা গেইমগুলো খেলুন

১০. ভিডিওতে আকর্ষণীয় ইফেক্ট ব্যবহার করুন

১১. ফলোয়ারদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখুন

12. প্রোফাইলকে গুছানো করুন

১৩. সবার জন্য ভিডিও উন্মুক্ত রাখুন 

১৪. টিকটকের community guidelines অনুসরণ করুন

১৫. প্রোফাইলকে বড় করুন

উপরে উল্লেখিত নিয়মগুলো অনুসরণ করলে অবশ্যই আপনি ভাইরাল হতে পারবেন। 

এইবার এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

১. নির্দিষ্ট সময়ের পরপর ভিডিও আপলোড করা:

টিকটক একটি শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটর্ফম। এখানে ভাইরাল হওযার ক্ষেত্রে ভিডিও এর দৈর্ঘ্যও অনেক প্রভাব ফেলে।

টিকটক ভিডিওর দৈর্ঘ্য কেমন হওযার উচিত? টিকটকে একটি স্টান্ডার্ট ভিডিও দৈঘ্য হলো ৩০ সেকেন্ড।

৩০ সেকেন্ড এর বেশি কিংবা কম হলে ভিডিও কোয়ালিটি বজায় থাকে না। তাই আপনাকে ৩০ সেকেন্ডের ভিডিও দিতে চেষ্টা করতে হবে।

২. নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা:

নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা টিকটকসহ প্রায় সব প্লাটফর্মের প্রধান চাওয়া থাকে।

ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব যাই হোক না কেন সব প্লাটফর্মগুলোই সেই ব্যবহারকারীকে গুরুত্ব দেয় যারা নিয়মিত ভিডিও আপলোড করে।

নিয়ামিত ভিডিও আপলোড করার ব্যপারটার গুরুত্ব সম্পর্কে আপনি কোনো সেলিব্রেটির আইডি দেখলেই বুঝতে পারবেন। সেলিব্রেটিদের লাক্ষ লক্ষ ফলোয়ার থাকা সত্বেও তারা প্রতিদিন ৩-৪ টা ভিডিও আপলোড করে।

এতে তাদের ফলোয়ারদের কাছে ভিডিও যাওয়ার সাথে সাথে নতুন ব্যবহারকারীর কাছেও সেই ভিডিও যায়।

তাই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে প্রতিদিন ৩-৪টা ভিডিও দেওয়ার আর না দিলেও ১ যেন ভিডিও দেন।

৩. ট্রেন্ডিং সাউন্ড কিংবা গান ব্যবহার করা:

টিকটকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু গান কিংবা সাউন্ড ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া গান কিংবা সাউন্ডগুলো দিয়ে সবাই ভিডিও তৈরি করে কারণ এতে ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

তাই আপনিও চেষ্টা করবেন ভাইরাল গান কিংবা সাউন্ডগুলো দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে।

৪. ট্রেডিং বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করা:

ট্রেডিং বিষয় বলতে যে বিষয়গুলো নিয়ে হঠাৎ করে চারিদিকে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয় সেগুলোকে বলে।

ট্রেডিং বিষয়গুলো উপর ধারণা এবং আপনার মন্তব্য প্রদান করে ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
যেহেতু ট্রেডিং বিষয় সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ বেশি থাকে তাই আপনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার চান্স বেশি থাকে।

৫. সেলিব্রেটিদের সাথে কোলাবোরেশান করা:

আপনি প্রায়ই দেখবেন যে অনেকই আছে যারা সেলিব্রেটিদের সাথে ভিডিও করে আর তাদের সাথে ডুয়েট করে।

সেলিব্রেটিদের সাথে ভিডিও করার মাধ্যমে আপনার ফ্রি প্রোমোশন হয়ে যাবে। ভাইরাল হওয়ার ক্ষেত্রে এটাও একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

৬. অন্য টপিকের ভিডিও আপলোড করা:

অনেক ভিডিও আপলোডের পরও টিকটকে ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে না? এই ক্ষেত্রে আপনি যেটা করতে পারেন সেটা হলো আপনার ভিডিও এর টপিক বদলানো।

এতে করে আপনি আপনার ভিউয়ারদের মন বুঝার সাথে সাথে বেশি রিচ পাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।

৭. মূল্যবান ও অর্থ বহ ভিডিও তৈরি করা:

টিকটক ভিডিও মানে এই না যে আপনি আপনার ইচ্ছে মতো যেমন তেমন ভিডিও দিবেন।

যদি আপনি ভিউয়ারসদের মন জয় করতে না পারন তাহলে আপনার ভিডিও কখনো আপনার জন্য সুফল নিয়ে আনতে পারবে না।

খারাপ ভিডিও আপনার ভিউয়ারসদের মনে আপনার একটি নেগেটিভ ইমেজ তৈরি করে যা আপনার জন্য কখনোই ভালো নয়।

তাই সব সময় চেষ্টা করবেন অর্থ বহ মূল্যবান ভিডিও আপলোড দিতে।

৮. টাইটেল ও হ্যাসট্যাগ ব্যবহার করা:

#ট্যাগ ব্যবহার: বিভিন্ন ধরনের #ট্যাগ যেমন: #foryou, #Love, #Viral, #Support ইত্যাদি ব্যবহার করুন। #ট্যাগ আপনার কটেন্ট বেশি মানুসে কাছে যেতে সাহায্য করবে।

আকর্ষণীয় ক্যাপশন: একটি আর্কষণীয় ক্যাপশন সব সময়ই রিচ বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক দিক। ক্যাপশন ব্যবহারকারীদের আপনার ভিডিও এর দিকে আর্কষন করে।

৯. নতুন আসা গেইমগুলো খেলা:

টিকটক নির্দিষ্ট সময় পরপরই নতুর নতুন কিছু গেইমস আসে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এগুলো বাচ্চাদের গেইমের মতো আর হাস্যকর। 

tiktok games

দেখা যায় এগুলো খেলে অনেকেই ভিডিও তৈরি করে যা খুব ভাল ভিউস পায়।

আপনি টিকটকে নতুন কোনো গেইম আসলে যত তারাতাড়ি সম্ভব খেলে তার ভিডিও আপলোড করবেন।

১০. ভিডিওতে আকর্ষণীয় ইফেক্ট ব্যবহার করা:

টিকটক একটি শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্মের সাথে সাথে একটি ভালো ভিডিও এডিটরও। এটি দিয়ে অনেক নজরকাড়া এডিটিং করা যায়।

এছাড়াও প্রতি আপডেটে টিকটকে কিছু নতুন নতুন ইফেক্ট আর ফিচার সংযোজন হয়।

 এই পিচার আর ইফেক্টগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ভিডিওকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন। ফলে আপনার ভিডিও ভাইরাল হবে।

১১. ফলোয়ারদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা:

টিকটকে ভাইরাল হওয়া অনেকটা নির্ভর করে আপনার ফলোয়ারের উপর। একটি টিকটক ভিডিও আপলোড করার সাথে সাথে তা যাবে আপনার ফলোয়ারের কাছে।

আপনার ফলোয়ারের কাছ থেকে ভাল সাড়া ফেলে তা আবার যাবে বাইরে। তাই ফলোয়ারদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।

টিকটকে ফলোয়ারদের সাথে কিভাবে ভালো সম্পর্ক তৈরি করবেন?

ফলোয়ারদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করার অনেক উপায় আছে তার মধ্যে কিছু নিচে দেখানো হলো

ফলোয়ারদের ভিডিওতে রিয়েক্ট করা, ফলোয়ারদের উল্টো ফলো করা, তাদের কমেন্টে রিপ্লাই দেওয়া।

১২. প্রোফাইলকে গুছানো করা:

কেউ আপনার ভিডিও দেখার আগে অবশ্যই আপনার প্রোফাইলটা চেক করবে। ভিডিও দেখে ভাল লাগলেও আপনার প্রোফাইলটা চেক করবে আপনার সম্পর্কে ধারণা নিতে। 

তার মনে যদি আপনার জন্য ইতিবাচক ধারণা গ্রহণ করে তাহলে সে আপনাকে সাপোর্ট করবে, অন্যথায় না। 

চেষ্টা করতে হবে প্রোফাইলটাকে সাজানো গুছানো রাখতে এবং ভালো মানের কভার ছবি ও bio দিতে।

১৩. সবার জন্য ভিডিও উন্মুক্ত রাখা:

যে ভিডিওগুলো আপলোড করবেন সবগুলো ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা না থাকলে Public করে রাখবেন। এতে বাইরের লোকজনরাও আপনার ভিডিও দেখতে পাবে।

অনেক সময় only me হয়ে যায় যার ফলে ভিডিওতে কোনোন ভিউস আসবে না। তার বিষয়টির দিকেও নজর দেওয়া উচিত।

১৪. টিকটকের community guidelines অনুসরণ করা:

টিকটকের কিছু নিদিষ্ট নিয়ম রয়েছে যা আপনাকে অবশ্যই ফলো করতে হবে। আপনি টিকটক অ্যাপে গিয়ে নিয়মগুলো দেখে আসতে পারেন।

নিয়মগুলো অনুসরণ না করলে হয় আপনা  একাউন্টের কোনো সমস্যা হবে, না হয় আপনার ভিডিওতে ভাল ভিউস আসবে না।

১৫. প্রোফাইলকে আরো বড় করার চেষ্টা করা:

আপনার প্রোফাইল যত বেশি বড় হবে আপনার ভিডিওর রিচ তত বেশি হবে এবং ভাইরাল হওয়ার চান্সও বাড়বে।
tiktok profile
প্রোফাইল বড় করার জন্য আপনি অন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আপনার আইডির প্রমুটিং করতে পারেন। 

টিকটকের ভিতরেও আপনি অন্য জনের সাথে ফলোয়ার একচেইন্জ করতে পারেন। এতে আপনার ফলোয়ার ভিউস দুইটাই বৃদ্ধি পাবে।

উপসংহার

আমি এই আর্টিকেল চেষ্টা করেছি আপনাদের জানিয়ে দিতে যে, কিভাবে TikTok ভিডিও ভাইরাল করতে পারবেন। 

উপরে আমি ১৫টি উপায় তুলে ধরেছি যেগুলো অনুসরণ করলে আপনিও TikTok ভিডিও ভাইরাল করতে পারবেন।

TikTok-এ বেশি ফলোয়ার করে ভিডিও ভাইরাল করা কঠিন কোনো বিষয় শুধু আপনাকে মন দিয়ে ধর্য সহকারে কাজ করে যেতে হবে।

আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা TikTok ভিডও কিভাবে ভাইরাল করা যায় তার একটা ধারণা পেয়ে গেছেন।

Comments